বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, এই সিদ্ধান্ত জনগণের তথ্য জানার আইনসিদ্ধ অধিকার নিশ্চিতের পথে অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ। তবে কি ধরে নিতে হবে- বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ঋণখেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের মতো অপরাধী মহলের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে। নাকি যারা ঋণখেলাপি ও জালিয়াতিসহ এ খাতের সংকটের জন্য দায়ী তাদের স্বার্থ সুরক্ষার প্রয়াস এটি?
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এমন উদ্বেগ জানায় সংস্থাটি।
বিবৃতিতে টিআইবি উদ্বেগে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতের তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রায় মান্থলী ধরে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিলেন সংবাদকর্মীরা ও গণমাধ্যমরা। গভর্নরের এ ক্ষেত্রে নিরুপায় হয়ে সমস্যা সমাধানে সহায়তা চাইলেও ইতিবাচক কোনো ফল আসেনি।
বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, বিগত কয়েক বছরে আর্থিক খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারির যেসব তথ্য জনস্বার্থে প্রকাশিত হয়েছে তার বেশিরভাগই এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধ প্রবেশাধিকারের সূত্র ধরে। তবে কি ধারনা নিতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংক এ খাতের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত জালিয়াতি,ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারের মতো অপরাধী মহলের অব্যাহত সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে?
তা গোপন করতেই এমন নিন্দনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে,চক্রটির হাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি ও নেতৃত্ব যে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
এটিকে স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশই নয়। বরং ঔপনিবেশিক মানসিকতারও পরিচায়ক উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমস্যার সমাধান না করে গভর্নর যে পাসনির্ভর ব্যবস্থা চালু করার কথা বলছেন, প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিচ্ছেন, তা আর যা-ই হোক, সংবাদমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব, বিশেষ করে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহে ক্ষেত্রে বাস্তবে অপ্রতিরোধ্য নিষেধাজ্ঞাব আরোপী শুধু নয়। বরং এর ফলে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ প্রদানে বিরত থাকতে চাইবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাই।
এ সংস্থাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত আরও বড় বিপদ হতে আনতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের পরিস্থিতি নিশ্চিতে অবিলম্বে উক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার ঘোষণার মাধ্যমে অবাধ তথ্য প্রকাশের পথকে সুগম করবে বলে আশা প্রকাশ করে টিআইবি।
